বাংলা কবিতা

 

 

 

 

..
Budhni Mejhan

ছোটবেলায় শুনেছিলাম বুধনী মেঝানের গল্প।

সেদিন লোকমুখে হয়েছিল প্রচার  অল্পসল্প।।

গল্প হয়তো জানা, হয়ত অনেকের অজানা।

গল্প হলেও সত্যি, নয়কো আমার  কল্পনা।।

দামোদর তীরে,এক আদিবাসী গ্রাম,

সাঁওতাল পল্লী, কারবানা তাঁর নাম।

শান্ত নিবিড় ছায়াঘেরা কারবানা হোথা,

সভ্যতার প্রবেশ তখনো হয়নি সেথা।

বাঁধ তৈরী হোল শুরু, দামোদরের বুকে,

সবাই সপ্ন দেখে – কাটবে জীবন সুখে।

দূর গ্রামের অনেকে কাজ পেল যারা,

দিনান্তে ফিরতো গ্রামে,  দল বেঁধে তারা।

এমনি করে কাটছিল দিন, নিয়ে স্বামী সংসার ।

পঞ্চদশী সাঁওতাল রমনী, বুধনি নাম তার।

বাঁধ তৈরি হল শেষ, যাত্রা হবে শুরু।

উদবোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নেহরু।।

অভ্যর্থনায় পরাবে  কে টীকা ও মালা ?

বুধনীই ছিল সেদিনের ফয়সালা।

করল অভ্যর্থনা বুধনী সাঁওতাল বালা,

নেহেরুকে পরিয়ে টীকা আর মালা ।

শ্রমিকের মর্যাদা ভেবে বুধনী ছিল উপযুক্ত,

নেহরু বুধনীকে দিয়েই করলো বাঁধ উন্মুক্ত।

মুখে মুখে খবর গেল কারবানা গ্রামে,

গুঞ্জন ধিক্কার শুরু হল বুধনীর নামে।

সমাজ বলল ‘ বুধনী  কৈরলেক বিহা,

গলায় মালা আর কপালে টিক দিয়া।”

নেহেরুতো সাঁওতাল লয়, বুধনী হয়েছে জাতভ্রষ্ট।

বুধনী হল গ্রাম থেকে বিতাড়িত, সবাই বলল সে নষ্ট।।

বিতাড়িত বুধনীরে দিল না কেউ এক ফোঁটা জল ।

নিরুপায় বুধনী করল গ্রাম ত্যাগ, নিয়ে চক্ষু ছলছল।।

হটাৎ করে পালটে গেল তার চেনা জগতটাই।

সমাজ করল সর্ব্বহারা, রাস্তায় হল তার ঠাই।।

প্রধান মন্ত্রী নেহরু বলেছিলেন – ইতিহাস প্রমান,

আধুনিক ভারতে পাঞ্ছেত হল “দেবালয়” সমান।

ভাগ্যের পরিহাস, মন্দিরে হল সে আছ্যুত,

বিনা কারনে ডিভিসি করলো তারে কর্মচ্যুত।।

এমনি করেই  সমাজ কুসংস্কার আচ্ছন্ন,

কেড়ে নিল তাঁর ঘর সংসার, মুখের অন্ন ।।

প্রগতির বলি, বুধনী মেঝান হল নিস্বঃ।

পাঞ্ছেত ড্যাম কেড়ে নিল তার সর্ব্বস্বঃ ।।

অবশেষে মিলল ঠাই, দয়ালু দত্তবাবুর ঘরে,

ক্রমে তারা কাছে এল, বাঁধল ঘর নতুন করে।

যদিও বুধনী পায়নি তার চাকরী আর ফিরে,

তবুও তারা ছিল সুখে, কন্যা সন্তান ঘিরে।

কালের স্রোতে কেটেছে  বহু কাল যখন।

হলেন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী তখন।।

বুধনী গেল দিল্লী, আশায় সেদিন বুক বাঁধি।

তার দুক্ষের গল্প শুনলেন রাজীব গান্ধী।।

ফিরে পেল চাকরী সে, আশা পুর্ণ হল তার ।

গল্প হল শেষ আমার, নেইকো জানা আর।।

বুধনী হয়েছে অমর, হবে না বিস্মৃত  কোনদিন

পাঞ্ছেত ড্যামের সঙ্গে  বাঁচবে  বুধনী চিরদিন।।

******

Composed by Anil C. Mandal (21 Oct 2013),

Copyright © Anil C. Mandal,  All rights reserved.

@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@

ইন্দ্রানী রায় স্মরনে

আমাদের অতি প্রিয় ইন্দ্রানী রায়,

স্মৃতির সরনীতে, উঁকি দিয়ে যায়।

সরল মনের, ছিলেন প্রিয় সবার,

ছিলেন স্বভাবে নম্র ও মিষ্টি

শুনিনি উচ্ছস্বর কনোদিন তাহার।

কথা বলতেন প্রয়োজনে, সামান্য,

ছিল না উচ্ছ্বাসের বহিপ্রকাশ,

বন্ধুমহলে তিনি ছিলেন অনন্য।

সেই ইন্দ্রানীদি, সবাইকে স্তব্ধ করে,

হারিয়ে গেলেন নবমীর রাতে,

মায়া বন্ধন ছিন্ন করি, বিদায় নিলেন

অন্ধকার শেষে, নতুন ঊষার প্রাতে।

আজও পারছি না মানতে এ শুন্যতা,

আমরা হতবাক, বিশ্বাস হয়নি,

তবু মানতে হচ্ছে, নেই এর অন্যথা।

 

যেখানেই থাকুন পার্থিব মায়া ত্যাগিয়া,

থাকুন পরম শান্তিতে আমাদের ভুলিয়া।

কামনা করি আত্মার শান্তি,

আমরা মনুষ্য অতি দীন।

থাকবে উজ্জ্বল স্মৃতি তব,

মোদের হৃদয়ে চিরদিন।।

Composed by Anil C. Mandal, 10 Oct 2014

in memory of Mrs. Indrani Roy w/o Shri Kalyan Roy (friend’s wife),

Copyright © Anil C Mandal, All rights reserved.

***********************************
Ekdalia2A

দুর্গাপুজা

শরতের নির্মল আকাশে পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘের খেলা।
ধরনীর বুকে শিউলীর সুবাস আর কাশের মেলা।
এমনি করেই প্রতি বছর পুজোর খবর আসে ।
এই বারতায় মোদের চিত্ত আনন্দেতে ভাসে।

অবশেষে মায়ের আগমনে র প্রতীক্ষার হয় শেষ
আয়োজনের নেইকো শেষ , কেনা কাটা অশেষ,
উৎসবের এই আলোকের ঝরনা ধারায় এসে ,
আমরা সবাই যাই আনন্দেতে ভেসে।

আলোর পাশেই অন্ধকার, আমরা দেখি আজ,
বঙ্গ মায়ের একি রূপ, একি তাঁর সাজ।
মায়ের এই দৈন্যদশা, মলীনতার বেশ,
আলোর মাঝে রেখে যায় বৈপরিত্যের রেশ।

মন্ডপের রোশনাই, মিথ্যা আলোক মালা,
পুজোর নামে প্রতিবারের অপচয়ের খেলা।
দেখি অন্ধকারে আজ, সন্তান তাঁর অর্ধনগ্ন,
শীর্ন দেহে জীর্ন বস্ত্র, জোটে না পেটের অন্ন।

মোদের এই আনন্দ উৎসব স্বার্থক হবে তখনি,
অবহেলিতদের কাছে টেনে নিতে পারব যখনি।
আর অভুক্তদের যদি পারি একটু অন্ন জোটাতে,
যদি পারি ওই শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে।

শেষকরি মাগো তোমার কাছে একটি নিবেদনে,
এই ধরাতল ভরে গেছে ছদ্মবেশী অসুরগনে।
আজকের এই অশুভ শক্তিকে করো মা খানখান,
অশুভের উপর শুভের জয় – এই হোক জয়গান।

Composed by : Anil C. Mandal (অনিল চন্দ্র মন্ডল)

07 September 2010

Coyright ©Anil C Mandal (Author). All rights reserved.

*************************

ম্যাহেক

কোন সুদুরের ওপার হ’তে

আসবে তুমি মায়ের কোলে,

সেই আশাতে বসে ছিলাম

তোমায় স্বাগত করব বলে।

হঠাৎ সেদিন খবর পেলাম,

হঠাৎ তোমার আগমন,

আমরা হেথায় উল্লসিত

তোমার লাগি আনমন।

লক্ষীবারের প্রভাত বেলায়,

বাইশে এপ্রিলের দিনে,

স্যুইজারল্যান্ডে জন্ম তব,

এমনই এক শুভক্ষনে।

ম্যাহেক নামে জানবে সবাই

হবে তুমি পরিচিত,

“নিষ্ঠা” আর “ম্যাহেক” দিয়ে

করবে জগৎ সুরভিত।

~ দাদামনি

Composed by : Anil C. Mandal (অনিল চন্দ্র মন্ডল)

28 April 2010

Coyright ©Anil C Mandal (Author). All rights reserved.

*****************

Leave a comment